এক ব্যাংক থেকেই ৬৩ শতাংশ টাকা নিয়েছেন এস আলম: চাপ প্রয়োগে বেনামি ঋণ ৩৮ হাজার কোটি টাকা
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের একটি তদন্ত প্রতিবেদন থেকে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। রিপোর্ট অনুযায়ী, ব্যাংকটি মোট ৬০ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে, যার মধ্যে প্রায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা নিয়েছেন এস আলম গ্রুপ। এ পরিমাণ টাকা ব্যাংকটির ঋণের ৬৩ শতাংশ। তবে, এস আলম গ্রুপ জামানত হিসেবে রেখেছেন মাত্র ৪ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকার সম্পদ, যা তার ঋণের মাত্র ১২ শতাংশ।
এই বিপুল পরিমাণ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে ২৫৩টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে, যাদের অধিকাংশই কাগুজে, বেনামি এবং অস্তিত্বহীন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একজন পরিচালক তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান থেকে খুব বেশি ঋণ নিতে পারেন না। এজন্য এস আলম গ্রুপ বিভিন্ন নামসর্বস্ব এবং বেনামি প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে ঋণ উত্তোলন করেছে।
সম্প্রতি ব্যাংকটির ২৪টি শাখায় বিশেষ পরিদর্শন পরিচালিত হয়, যার প্রতিবেদন থেকে বের হয়ে এসেছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এস আলম গ্রুপের নামে নেওয়া ঋণগুলো দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) পাঠানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়া ঋণের মধ্যে অনেক ঋণ খেলাপি হয়ে গেছে। যেমন, মেসার্স এমডি তমিজউদ্দিনের নামে চলতি মূলধন খাতে ৫৬ কোটি টাকা এবং সাধারণ ঋণ হিসেবে ১৬৬ কোটি টাকা, যেটি এখন খেলাপি। এমন আরও অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যাদের ঋণ খেলাপি এবং জামানত ছাড়াই ঋণ দেওয়া হয়েছে।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান জানিয়েছেন, এটি একটি প্রাথমিক তদন্ত, তবে প্রকৃত তদন্ত বিদেশি বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে ফরেনসিকভাবে শুরু হয়েছে।
এছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংক ৬টি ব্যাংকের সম্পদের মান পর্যালোচনা করার জন্য দুটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দিয়েছে। এসব ব্যাংকগুলোর মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকও রয়েছে।
এই পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর এবং এর ফলে এস আলম গ্রুপের ঋণ নেওয়ার প্রক্রিয়া এবং ব্যাংকিং খাতে তার ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
1 Comments
ওদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হোক।
ReplyDelete